প্রতিনিয়ত তথ্যপ্রযুক্তির উন্নতির ফলে আমাদের সমাজের ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে।বর্তমানে বলতে গেলে আমরা প্রতি মিনিটেই প্রযুক্তির ব্যবহার করছি। তাই এই সম্পর্কে জানা খুবই জরুরী। আজ আমরা তথ্য প্রযুক্তির নানা রকম দিক সম্পর্কে আলোচনা করব। তাই আর্টিকেলটি ভালো করে পড়ার জন্য অনুরোধ করছি।

পোস্ট সূচিপত্র: সমাজ ও বিশ্বের অগ্রযাত্রায় তথ্যপ্রযুক্তির ভূমিকা কত বেশি তা সংক্ষিপ্ত আকারে বলা মুশকিল হবে । বর্তমানে বলতে গেলে আমরা প্রতি মিনিটেই প্রযুক্তির ব্যবহার করে থাকি। এখন বিশ্বের উন্নতসব দেশগুলোর মতোই বাংলাদেশ ও তথ্য প্রযুক্তির বহুমুখী ব্যবহার পরিলক্ষিত করা যায়।

ভূমিকা

পৃথিবীর মানুষকে এক সময় বেঁচে থাকার জন্য সম্পূর্ণ প্রকৃতির অনুকূল এর উপর নির্ভর করতে হতো।মানুষ বিভিন্ন অস্ত্র দান করে প্রকৃতির উপর থেকে নির্ভরশীলতা কমিয়ে এনেছে। সমাজের এই অপযাত্রায় তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে। তথ্যপ্রযুক্তিআমাদের নানাবিধ কার্যক্রমকে সহজ করে তুলেছে।

তথ্য প্রযুক্তি কি?

তথ্য প্রযুক্তি হলো তথ্য এবং ডেটা সংগ্রহণ, সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াকরণ, প্রেরণ, এবং নিয়ে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন প্রযুক্তির ব্যবহার করে তৈরি একটি সমগ্র প্রণালী। আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করে তথ্য সরবরাহ, সংরক্ষণ, সংযোজন এবং বিয়োজন করাই হলো তথ্য প্রযুক্তির মূল কাজ। তথ্য প্রযুক্তি কাজে লাগাতে ডিজিটাল ডেটা প্রক্রিয়া, ট্রান্সফার, অ্যানালাইসিস এবং প্রদর্শনের জন্য ব্যবহৃত হয়।

তথ্য প্রযুক্তির গুরুত্ব

বর্তমান বিশ্বের যে উন্নতির অগ্রযাত্রা পরিলক্ষিত হচ্ছে তা তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে সাধিত হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক প্রসারের ফলে আমাদের জীবনযাত্রা আরও সহজ হয়েছে। দিন দিন তথ্য প্রযুক্তি উৎকর্ষের পথ ধরেই হাঁটছে। যেভাবে একসময় তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার করা হচ্ছে ঠিক একই ভাবে অথবা তার চেয়ে আরো উন্নত ভাবে ভবিষ্যতে তথ্য প্রযুক্তিকে ব্যবহার করা হবে।

তথ্য প্রযুক্তির অভূতপূর্ণ উন্নয়ন এবং তথ্যের নিবিড় ভাবে আদান-প্রদানের মাধ্যমে সারা বিশ্বের মানুষের মধ্যে একটি পারস্পারিক পরিচিতি ও সু-সম্পর্কের বন্ধন সুপ্রিয় হচ্ছে প্রতিনিয়ত এবং প্রথমবারের মতো বিশ্বগ্রাম সৃজন এর সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হচ্ছে। আমরা নিজেরাই অনুভব করতে পারি যে, তথ্যপ্রযুক্তির ক্রমন নয়নের কারণে আমরা বিশ্বব্যাপী এখন কেউ কারো থেকে দূরে কিংবা বিচ্ছিন্ন নয়।

তথ্য প্রযুক্তির এই বিশ্বায়ন প্রক্রিয়ার কারণে অবাধ ও সহজলভ্য তথ্য প্রবাহের উৎস তৈরি থেকে শুরু করে সার্বিক জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন ও কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি দূরশিক্ষণ চিকিৎসা সেবা বৃদ্ধিসহ ব্যবসা-বাণিজ্যের ও বিশ্বব্যাপী ব্যাপকভাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আর এইগুলোর কারণে বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তির গুরুত্ব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

আরো পড়ুন: কয়েকটি প্রযুক্তির নাম – ৫টি শিক্ষা প্রযুক্তির নাম

তথ্য প্রযুক্তির সুফল

বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তির সুফল সম্পর্কে বলে শেষ করা যাবেনা। কারণ এটি ব্যবহার এখন সর্বব্যাপী। তথ্যপ্রযুক্তি এখন সব ক্ষেত্রেই বিশেষভাবে ভূমিকা রাখছে। তথ্য প্রযুক্তি উন্নতির ফলে উন্নয়নশীল দেশগুলোর একটি বিরাট অংশ ইন্টারনেটের মাধ্যমে ঘরে বসে দেশে এবং দেশের বাইরে চাকরির বাজারে আবেদন করে নিজেদের বেকারত্ব দূর করতে পারছে খুব সহজে।

কম্পিউটার নেটওয়ার্ক: ইন্টারনেট, লোকাল এলান, ওয়াইফাই এবং অন্যান্য নেটওয়ার্ক প্রযুক্তির মাধ্যমে তথ্য প্রয়োগ করা হয়। বিশ্বগ্রামের প্রেক্ষিতে যোগাযোগ ব্যবস্থা বলতে এখন একই সঙ্গে তথ্যের আদান-প্রদান কিংবা ভাব বিনিময় করা কেউ বোঝায়। নতুন নতুন প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন যোগাযোগের ক্ষেত্রে পরিবর্তনের সূচনা করছে।

তবে ইন্টারনেট কিংবা সামাজিক নেটওয়ার্কিং এর ওপর বেশি নির্ভরতা কে তরুণ প্রজন্মের জন্য অনেক সময় এই আসক্তির পর্যায়ে চলে যাবার কারণে পুরো পৃথিবীতে এর ব্যবহার এখন আলাদাভাবে পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে।

সফটওয়্যার: এপ্লিকেশন, এপি, অপারেটিং সিস্টেম, এবং ডেটাবেস সিস্টেম এমন সফটওয়্যার যা তথ্য প্রযুক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

ডেটা এনালাইটিক্স: ডেটা থেকে মূল তথ্য বের করার জন্য একটি প্রক্রিয়া, যা সফটওয়্যার এবং অ্যালগরিদম ব্যবহার করে।

ক্লাউড কম্পিউটিং: ডেটা এবং সেবা স্থানীয় সার্ভারের বদলে অনলাইন সার্ভারে সংরক্ষণ এবং প্রক্রিয়া করার জন্য ব্যবহৃত হয়।

সাইবার সুরক্ষা: ডেটা এবং তথ্য সুরক্ষিত রাখার জন্য সুরক্ষা প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়।

আইওটি (IoT): সাধারণ বস্ত্ত যেমন স্মার্টফোন, গাড়ি, গৃহ যন্ত্রাংশ এবং অন্যান্য ডিভাইস যেগুলি ইন্টারনেটে সংযুক্ত থাকে এবং তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে।

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI): মানব বুদ্ধিমত্তাকে অনুকরণ করে তথ্য প্রযুক্তি যা মেশিনে অ্যালগরিদম এবং ডেটা প্রয়োগ করে স্বাধীনভাবে মানবপ্রাণী যেমন নির্ধারিত কাজ করতে সক্ষম হয়।

শহরের প্রশাসন এবং প্রযুক্তি ব্যবহার করে শহরের প্রবৃদ্ধি এবং সুবিধার উন্নতি করার জন্য।

বিগ ডেটা: মাসিক এবং বড় বড় ডেটা সেট থেকে তথ্য প্রাপ্ত এবং প্রক্রিয়া করার জন্য প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। এই উদাহরণগুলি মাত্র কোনও কিছু নয়, তথ্য প্রযুক্তির আরও অনেক দিক ও ব্যবহার আছে যা আমাদের সামাজিক, পেশাদার এবং ব্যক্তিগত জীবনে গভীর প্রভাব ফেলতে সাহায্য করে।

তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহার

তথ্যপ্রযুক্তির নানা সুফল বিদ্যমান থাকলেও এর অপব্যবহারের মাধ্যমে এটি কুফলে পরিণত করছে অনেকেই। আর এই তথ্য প্রযুক্তিকে অপব্যবহার করে বর্তমানে নানা রকম অপরাধ মূলক কর্মকান্ড করা হচ্ছে প্রতি নিয়ত। যে তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহার বা কুফল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

যেহেতু পৃথিবীর প্রায় সকল মানুষই কোন না কোন ভাবে তথ্য প্রযুক্তির সাথে সম্পৃক্ত এজন্য এর ব্যবহারের নৈতিকতার বিষয়টি খুব গুরুত্ব দিয়ে নেওয়া উচিত। গুরুত্ব না দেয়া হলে এটি ব্যবহার করে অনৈতিক কাজ দিয়ে শুরু করে খুব সহজে অন্যায় এবং অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়তে পারে। তাই সকল কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের তথ্য আরে নৈতিকতা সম্পর্কে অবহিত এবং যথাযথভাবে রক্ত হওয়ার কোন বিকল্প নেই।

তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহারের মাধ্যমে বর্তমানে নানারকম কর্মকাণ্ড করে আসা হচ্ছে। তার মধ্যে একটি হল হ্যাকিং। যার মাধ্যমে কোন কম্পিউটার সিস্টেম নেটওয়ার্ক অথবা টাটার উপর অনুমোদিতভাবে এক্সেস লাভ করা হচ্ছে। এতে ব্যক্তির তথ্যের বা সিস্টেমের প্রতি সাধন করা হয় এবং অনেক ক্ষেত্রে কোন ক্ষতি না করে শুধু নিরাপত্তার ছুটির সম্পর্কে কম্পিউটার ব্যবহারকারীকে অবগত করে।

আবার তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করেই স্প্যামিং করা হয় অবাঞ্ছিত ইমেইল কিংবা মেসেজ পাঠানো কে বোঝায়। কোন ব্যক্তি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো বেআইনি প্রবেশ করে প্রতি সাধন, ও কার্য করে বা বিনষ্ট করার চেষ্টা করে।

মন্তব্য

আমাদের জীবনের অন্যান্য প্রতিটি সেক্টরের ন্যায় তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিবেক, বুদ্ধি ও বিবেচনাকে নৈতিকতার মানদন্ড হিসেবে ব্যবহার করে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি সহ সব ধরনের অপরাধমূলক কাজের প্রবণতা হতে পরিত্রাণ পেতে পারি। তথ্য প্রযুক্তিকে সদ্ব্যবহার করে আমাদের জীবনকে আরো উন্নত করতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *