আসসালামু আলাইকুম আশা করি সবাই ভালো আছেন। আজকে আমরা আপনাদের মাঝে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি। আজকের আলোচ্য বিষয়বস্তু হলো দ্রুত পেটের গ্যাস কমানোর উপায় এবং চিরতরে গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায় সম্পর্কে। আপনি যদি এ বিষয়ে জানতে চান তাহলে অবশ্যই আমাদের আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন।

বর্তমানে এসিডিটির সমস্যা এখন প্রত্যেকটা মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে গেছে । বিশেষ করে অতিরিক্ত ভাজাপোড়া অথবা অতিরিক্ত তেল জাতীয় খাবারের কারণে এসিডিটির সমস্যা বেড়েই চলেছে । আজ আমরা এই পোস্টের মাধ্যমে এসিডিটির নানা দিকগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করব। তাই সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য অনুরোধ করছি।

ভূমিকা

আমাদের দেশে বর্তমানে বহুল প্রচলিত একটি সমস্যা যা দিন দিন প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে তার নাম হচ্ছে অ্যাসিডিটি। শুধুমাত্র আমাদের দেশই নয় বরং এই সমস্যাটি বর্তমানে পুরো বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। এই কারণে এই সমস্যাটির হাত থেকে মুক্তি পাওয়াটা খুবই জরুরি। আপনি যদি আজকের আর্টিকেল সম্পূর্ণ পড়েন তাহলে জানতে পারবেন দ্রুত পেটের গ্যাস কমানোর উপায় এবং চিরতরে গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায় সম্পর্কে। তাই চলুন দেরি না করে শুরু করা যাক।

অ্যাসিডিটি কি?

অ্যাসিডিটি হলো এমন একটি সমস্যা যা বর্তমানে প্রতিটি মানুষেরই কম বেশি হয়ে থাকে। এটি হলো এক ধরণের পেটের সমস্যা বলা যেতে পারে। খাদ্য হজম করতে পাকস্থলীতে হাইড্রোক্লোরিক এসিড আমাদের পেটের মধ্যে নি:সৃত হয়ে থাকে। যখন এই হাইড্রোক্লোরিক এসিড আমাদের পাকস্থলীতে অতিরিক্ত জমা হয় তখন আমাদের অ্যাসিডিটি সমস্যাটি দেখা দেয়।

যখন এই এসিডিটির পরিমাণ বেড়ে যায় তখন আমাদের পেটে নানা রকম সমস্যা দেখা যায়। আমাদের যেসব খাবার হজমে দেরি হয় সেই সকল খাবার যদি গ্রহণ করা হয় সেক্ষেত্রে পাকস্থলীতে অতিরিক্ত এসিডের দরকার হয় হজম করতে। আর এই কারণে পাকস্থলীতে হাইড্রোজেন ক্ষরিত হয়ে ক্লোরিনের সঙ্গে মিলে হাইড্রোক্লোরিক এসিড তৈরি করে।

অ্যাসিডিটি কেন হয়?

অ্যাসিডিটি হওয়ার নানা কারণ রয়েছে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো খাদ্যাভাসের কারণে। আর এটি হল নিয়মিত খাদ্যাভাসের রুটিন পরিবর্তন করা। যেমন যখন তখন খাবার খাওয়া। এছাড়াও মসলাদার ও অতিরিক্ত তেলে ভাজা জাতীয় খাবার খাওয়া। ফিজিক্যাল মুভমেন্ট এর অভাব থাক চুপচাপ শুয়ে বসে থাকা আর খাবার খেয়ে যাওয়া।এসিডিটির ভর আরো কারণ রয়েছে যেমন ধূমপান মধ্যপান করা। আমি জাতীয় খাবার বেশি খাওয়া। ফাস্টফুট জাতীয় খাবার অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করার।

দ্রুত পেটের গ্যাস কমানোর উপায় - চিরতরে গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায়

প্রতিনিয়ত খালি পেটে কফি, চা জাতীয় খাবার বেশি পরিমাণে খেলে অ্যাসিডিটি সমস্যা দেখা দিতে পারে। অ্যাসিডিটি কারণ হিসেবে আরো রয়েছে খাবারের বেশি পরিমাণে লবণ খাওয়া। এই লবণ বা নুন বেশি পরিমাণে বা বাড়তি খেলেও পাকস্থলের এসিড নিঃসরণ বেড়ে যায়।অ্যাসিডিটি শুধু খাবারের ফলে সৃষ্টি হয় না বরং খাবার এর অনিয়ম ছাড়ার এটি সৃষ্টি হতে পারে। যেমন অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করলে অথবা বেশি পরিমাণে অনিদ্রায় থাকলেও অ্যাসিডিটি সৃষ্টি হতে পারে।

আরো পড়ুনঃ ডায়াবেটিস কেন হয়? ডায়াবেটিস এর লক্ষণ

অ্যাসিডিটির লক্ষণ

অ্যাসিডিটির নানারকম লক্ষণ আমাদের শরীরে পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। তবুও এই অ্যাসিডিটিকে বর্তমানে আমাদের জীবনের একটি অংশ হিসেবে মনে করা হয়ে থাকে। আর এই অ্যাসিডিটি বর্তমানে আমাদের মাঝে নানা ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। অ্যাসিডিটির কারণে আমাদের নানা সমস্যা দেখা দেয়। যেমন:

  • পেট ফুলে যাওয়া
  • বুকে জ্বালাপোড়া অনুভূত হওয়া
  • খিদে কমে যাওয়া
  • পেটের মাঝখানে চিনচিনে ব্যথা অনুভূত হওয়া
  • বুক ও পেটে চাপ পড়ছে এমন অনুভূত হওয়া
  • হজম শক্তি কমে যাওয়া অথবা হজমে অসুবিধা হওয়া
  • কখনো কখনো প্রচন্ড মাথা ব্যথা সৃষ্টি হয় যার ফলে বমিও পর্যন্ত হয়ে থাকে
  • এসিডিটির ফলে মুখ এর ভেতরে টক হয়ে যাওয়া

এই লক্ষণ গুলো ছাড়াও আরও নানারকম সমস্যা দেখা দিতে পারে অ্যাসিডিটির কারণে।

দ্রুত পেটের গ্যাস কমানোর উপায়

আমাদের যেকোনো সময় গ্যাস্ট্রিক বা এসিডিটির মতো সমস্যা হতে পারে। এজন্য সে সময়দ্রুত পেটের গ্যাস কমানোর উপায় সম্পর্কে আমাদের সকলেরই জানা উচিত। যদি আমরা দ্রুত পেটের গ্যাস কমানোর উপায় সম্পর্কে না জানি তাহলে এর কারণে আমাদের নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই সকল সমস্যার হাত থেকে দূরে থাকতে হলে দ্রুত পেটের গ্যাস কমানোর উপায় সম্পর্কে জানতে হবে। 

দ্রুত পেটের গ্যাস কমানোর জন্য কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। নিচে পদ্ধতিগুলো উল্লেখ করা হলো। দ্রুত পেটের গ্যাস কমানোর উপায় বা অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তির উপায় হিসেবে চাহিদা মাফিক বিশুদ্ধ পানি বেশি পরিমাণে পানি করতে হবে। খালি পেটে চা ও কফি জাতীয় পানীয় খাবার পরিহার করতে হবে। অতিরিক্ত পরিমাণে ধূমপান, মদ্যপান অথবা অ্যালকোহল যুক্ত খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে।

অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তি পেতে বাইরের খোলা খাবার ও অতিমাত্রায় ফাস্টফুডে আসক্তি ছাড়তে হবে। অতিরিক্ত চর্বি জাতীয় খাবার গুলোকে পরিহার করে চলতে হবে। প্রতিনিয়ত অ্যাসিডিটি হয়ে থাকলে প্রতিদিন কলা ও তরমুজ খেলে উপকার পাওয়া যাবে। অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তির জন্য শসা খাওয়াও বেশ উপকারি ।

এছাড়াও ডাবের পানি অ্যাসিডিটি কমাতে সাহায্য করে থাকে। আবার প্রতিদিন নিয়ম মেনে পরিমাণ মতো ঠান্ডা দুধ খেলেও এই অসুবিধাগুলোর হাত থেকে অনেক উপকার পেতে পারেন। সবচেয়ে কার্যকর হলো ক্ষুধা পেলেই পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে হবে। সবচেয়ে ভালো হলো সুষম খাদ্য গ্রহণ করা। তাছাও যদি অ্যাসিডিটি বেশি পরিমাণে হয় তবে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে তার পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাওয়াটাই ভালো।

চিরতরে গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায় – অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তির উপায়

চিরতরে গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায় বা অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তি পেতে হলে নানা রকম নিয়ম কানুন অবলম্বন করে চলতে হবে। এই রোগ থেকে বাঁচতে কিছু পদ্ধতি হলো:

  • সঠিক সময়ে খাবার খাওয়া। নিয়মিতভাবে সকালের খাবার সকালে খাওয়া এ দুপুরের খাবার দুপুরে খাবার এবং রাতেরটা রাতে খাওয়া। এক্ষেত্রে একটি সময় নির্ধারণ করে নিতে হবে। যেন ঠিক সে সময়ের খাবারটা খাওয়া হয়।
  • অতিরিক্ত মসলা জাতীয় খাবার অথবা তেলে ভাজা এ জাতীয় খাবার খাওয়া পরিহার করাই ভালো। কারণ এ জাতীয় খাবার আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হয়ে থাকে তার পাশাপাশি এটি আমাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। এজন্য এই খাবারগুলো থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • এছাড়াও অতিরিক্ত পরিমাণের ঝাল জাতীয় খাবার কেউ পরিত্যাগ করতে হবে। যে খাবারগুলোতে অতিরিক্ত পরিমাণে ঝাল থাকে সে জাতীয় খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। ঝাল জাতীয় খাবার খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা গুলো আরো বেড়ে যেতে পারে। এজন্য ঝাল জাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে।

শেষ কথা

উপরের আলোচনার মাধ্যমে আমরা অ্যাসিডিটি সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করেছি। তার সাথে আরো জানানোর চেষ্টা করেছে দ্রুত পেটের গ্যাস কমানোর উপায়, চিরতরে গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায় সমূহ কোনগুলো সেই বিষয়ে।
আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।

এই ধরনের আরও আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট প্রতিনিয়ত ভিজিট করুন। এতক্ষণ পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। সুস্থ থাকবেন ভালো থাকবেন এই আশা রেখে শেষ করছি আজ এই পর্যন্তই আল্লাহ হাফেজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *