আসসালামু আলাইকুম আশা করি সবাই ভালো আছেন। আজকে আমরা আপনাদের মাঝে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি। আজকের আলোচ্য বিষয়বস্তু হলো অন্ডকোষ ব্যাথার কারন কি এই বিষয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ ধারণা আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করব ইনশাআল্লাহ। অন্ডকোষ ব্যাথার কারন কি সমূহ জানতে হলে আমাদের এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
প্রিয় পাঠক আপনি নিশ্চয় অন্ডকোষ ব্যাথার কারন কি সম্পর্কে জানতে আমাদের এই পোস্টটি ওপেন করেছেন। এজন্য আমার এই আর্টিকেলে আপনাকে জানাই সুস্বাগতম। আমি আজ আপনাদেরকে অন্ডকোষ ব্যাথার কারন কি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা রাখবো। তাই চলুন কথা না বাড়িয়ে জেনে নেই অন্ডকোষ ব্যাথার কারন সম্পর্কে।
অন্ডকোষ ব্যাথার কারন কি
অণ্ডকোষ একজন মানুষের শরীরের সবচেয়ে সংবেদনশীল অঙ্গ গুলির মধ্যে একটি। কারণ অন্ডকোষ এর পুরো অঞ্চলটি স্নায়ু দিয়ে পরিপূর্ণ থাকে। অণ্ডকোষের ব্যথা হঠাৎ বেশি এবং হঠাৎ ব্যথা কমে যায়। এটি একটি খুব খারাপ অবস্থা হতে পারে কারণ এর অর্থ হতে পারে যে আপনার অণ্ডকোষে রক্ত চলাচল হচ্ছে না।
অণ্ডকোষের ব্যথার সাধারণ কারণ হল অনেক সময় ধরে সাইকেল চালানো তবে অণ্ডকোষের ব্যথার অন্যান্য কারণ নির্ণয় করা কঠিন হতে পারে। ডান অন্ডকোষ ব্যাথার কারন কি বা বাম অন্ডকোষ ব্যাথার কারন ও প্রতিকার নিচে বর্ননা করা হলঃ
এপিডিডাইমাইটিস এর কারণে
বাম অন্ডকোষ ব্যাথার কারন কি ও ডান অন্ডকোষ ব্যাথার কারন কি তার মধ্যে একটি হল এপিডিডাইমাইটিস হল এপিডিডাইমিসের একটি সংক্রমণ এটি এমন একটি অঙ্গ যেখানে শুক্রাণু শরীর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার আগে পরিপক্ক হয়। এপিডিডাইমাইটিসের লক্ষণগুলির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত আছেঃ
- ব্যথা যা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়
- অণ্ডকোষের ব্যথার জায়গায় স্পর্শ করলে গরম অনুভব হয়
- ফোলা ভাব
- যৌনবাহিত সংক্রমণ যেমন ক্ল্যামাইডিয়া এবং গনোরিয়া এপিডিডাইমাইটিস হতে পারে।
- মূত্রনালীর সংক্রমণও এপিডিডাইমাইটিস হতে পারে।
কিডনিতে পাথর হওয়ার কারণে
কিডনিতে পাথরের কারণে ব্যথা হতে পারে যা অণ্ডকোষে ছড়িয়ে পড়তে পারে। যখন কিডনিতে পাথর হয় সেখানকার ব্যথার কারণে অন্ডকোষ এ ব্যথা হতে পারে। কিডনি পাথরের সাথে ব্যথা যুক্ত হতে পারে এমন অন্যান্য লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছেঃ
- প্রস্রাব এ রক্ত
- প্রস্রাব করার সময় জ্বালা পোড়া
- বমি বমি ভাব
- লিঙ্গের ওপরে ব্যথা
- তীক্ষ্ণ ক্র্যাম্পিং ব্যথা যা পিঠ থেকে অন্ডকোষ এ ছড়িয়ে পড়তে পারে
- ঘন ঘন প্রস্রাব করা
- বমি হওয়া
কিডনিতে পাথর হলে বাম অন্ডকোষ ব্যাথার কারন ও প্রতিকার বা ডান অন্ডকোষ ব্যাথার কারন ও প্রতিকার এর জন্য ডাক্তাররা প্রথমে অন্ডকোষ ব্যাথার ঔষধ দিয়ে কিছুদিন অপেক্ষা করে এটা নিজে ভালো হয়ে যাওয়ার জন্য।
আরো পড়ুনঃ ছেলেদের শারীরিক সমস্যা ও সমাধান জেনে নিন
অন্ডকোষ ব্যাথার ঔষধ দিয়েও যদি ভালো না হয় তাহলে অপারেশন করতে হতে পারে। আর তখন অন্ডকোষে ব্যাথা, জ্বর বা স্রাব হতে পারে তখন তাদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অন্ডকোষ ব্যাথার চিকিৎসা করা উচিত।
অর্কাইটিস এর কারণে
অর্কাইটিস হল অন্ডকোষের সংক্রমণ এবং ব্যথা। এপিডিডাইমাইটিস এর চিকিত্সা না করা হলে অর্কাইটিস হতে পারে। অর্কাইটিসের লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছেঃ
- ক্লান্তি
- জ্বর
- বমি বমি ভাব
- টেস্টিকুলার ব্যথা
- এক বা উভয় অণ্ডকোষ ফুলে যাওয়া
অর্কাইটিসের জন্য অন্ডকোষ ব্যাথা হতে পারে তাই মানুষের খুব তাড়াতাড়ি অন্ডকোষ ব্যাথার চিকিৎসা নেওয়া উচিত। কখনও কখনও এর ব্যথা খুব তীব্র হতে পারে। অর্কাইটিসের চিকিত্সা বিভিন্ন কারণের উপর নির্ভর করে করা হয়।
এর চিকিৎসায় একজন ডাক্তার ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক লিখে দিতে পারেন। যখন কোনো ভাইরাস এর কারণে অর্কাইটিস হয় তখন তারা অন্যরকম ভাবে অন্ডকোষ ব্যাথার চিকিৎসা করে ।
অন্ডকোষে অতিরিক্ত ব্যথার কারণ এবং চিকিৎসা
নিচে বাম অন্ডকোষ ব্যাথার কারন ও প্রতিকার এবং ডান অন্ডকোষ ব্যাথার কারন ও প্রতিকার জানবো। কি কি কারণে অন্ডকোষ ব্যাথা হয় এবং অন্ডকোষ ব্যাথার ঔষধ কি কি খাওয়া যেতে পারে আপনারা কখন ডাক্তার এর কাছে যাবেন জানতে পড়ুন।
ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি
ডায়াবেটিসের কারণে স্নায়ুর ক্ষতি হলে অণ্ডকোষে ব্যথা হতে পারে। ডায়াবেটিস এর নিয়ন্ত্রন করা অণ্ডকোষে ব্যথা সমাধান হতে পারে।
হাইড্রোসিল
হাইড্রোসিল এটি একটি তরল যা জমাট বেঁধে যায় ফলে অণ্ডকোষ ফুলে যায়। এগুলি সাধারণত শিশুদের বেশি হয় তবে যে কোনও বয়সের পুরুষদের এটা হতে পারে। যদিও এটাতে সাধারণত ব্যথা সৃষ্টি করে না তবে ফোলা থেকে কিছু ব্যথা হতে পারে। শিশুদের মধ্যে হাইড্রোসিল সাধারণত নিজে নিজেই ভালো হয়ে যায়। প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে।
ইডিওপ্যাথিক টেস্টিকুলার পেইন
টেস্টিকুলার ব্যথা একটি অজানা কারণে হয়। চিকিৎসকেরা অনেক পরীক্ষা করে এই রোগ নির্ণর করে।
মাম্পস
মাম্পসে আক্রান্ত বেশিরভাগ মানুষই দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে। যাইহোক বয়ঃসন্ধির পর মাম্পস হলে পুরুষরা অণ্ডকোষের ব্যথাতে ভুগতে থাকে।
স্ক্রোটাল ভর
স্ক্রোটাল ভরের কারণের উপর নির্ভর করে চিকিত্সা পরিবর্তিত হবে। অণ্ডকোষের কিছু কারণের মধ্যে রয়েছে এপিডিডাইমাইটিস এবং ক্যান্সার।
মূত্রনালীর সংক্রমণ
ব্যাকটেরিয়া মূত্রনালীতে প্রবেশ করে যার মধ্যে রয়েছে মূত্রনালী, মূত্রাশয় এবং কিডনি। সংক্রমণের একটি উপসর্গ হতে পারে টেস্টিকুলার ব্যথা। কখনও কখনও সংক্রমণ নিজেই ভালো হয়ে যেতে পারে, তবে খুব বেশি সমস্যা হলে অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন হতে পারে।
পিঠে ব্যথা
অন্ডকোষ এর ব্যথা পিঠে ব্যথা হওয়ার কারণে হয়ে থাকে। চিকিৎসার মাধ্যমে এটা ভালো হয়।
গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা
গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যার একটি উদাহরণ যা অন্ডকোষ এর ব্যথার কারণ হতে পারে ডাইভার্টিকুলাইটিস। ডাইভার্টিকুলাইটিস হল অন্ত্রের ব্যথা।
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক অন্ডকোষ ব্যাথার কারন কি কি সেই বিষয়ে একটি বিস্তারিত আলোচনা আপনার মাঝে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
এই ধরনের আরও আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট প্রতিনিয়ত ভিজিট করুন। এতক্ষণ পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। সুস্থ থাকবেন ভালো থাকবেন এই আশা রেখে শেষ করছি আজ এই পর্যন্তই আল্লাহ হাফেজ।