বাংলাদেশের খুবই সচরাচর এবং প্রায়ই হয়ে থাকে একটি রোগ যার নাম টাইফয়েড জ্বর। অনেকেই এই রোগ সম্পর্কে সুস্পষ্ট জ্ঞানের অভাবে এটিকে ভয় করে থাকে। আপনি যদি এই টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক হন এজন্যই আজ আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাকে জানানোর চেষ্টা করবো টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার গুলো কি এবং টাইফয়েড জ্বর হলে কি কি খাওয়া উচিত ও টাইফয়েড জ্বর ভালো করার উপায় সমূহ সম্পর্কে। তাই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

প্রিয় পাঠক আপনি যদি এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়েন তাহলে জানতে পারবেন টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার গুলো কি কি? কেন টাইফয়েড জ্বর হয়ে থাকে? টাইফয়েড জ্বর হলে কি কি খাওয়া উচিত এবং কি খাওয়া উচিত না এছাড়াও টাইফয়েড জ্বরের ওষুধ বা অ্যান্টিবায়োটিক এর নাম সমূহ গুলো কি কি ইত্যাদি।

টাইফয়েড জ্বর কি?

টাইফয়েড জ্বর একপ্রকারের পানিবাহিত রোগ। টাইফয়েড জ্বর পানিবাহিত রোগের মধ্যে অন্যতম। টাইফয়েড একটি মারাত্মক সংক্রমণ জনিত রোগ যা ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট হয়। টাইফয়েড জ্বর একটি বিশেষ ধরনের ব্যাকটেরিয়া যার নাম সালমোনিলা টাইফি এর মাধ্যমে টাইফয়েড জ্বর এবং সালমোনিলা প্যারাটাই ফি নামক ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে সৃষ্টি হয় প্যারা টাইফয়েড জ্বর। আর এ দুইটি নাম কেই এন্টিরিক জ্বর নামে অবহিত করা হয়।

টাইফয়েড জ্বর কেন হয়? – টাইফয়েড জ্বর হওয়ার কারণ কি?

টাইফয়েড জ্বর নানা কারণে হতে পারে। প্রথমত বলা যায় যে টাইফয়েড জ্বর যেহেতু পানি বাহিত একটি রোগ তাই এটি সংক্রমিত বেশি হয় দূষিত পানির কারণে। টাইফয়েড জ্বর দূষিত পানি ছাড়াও দূষিত কোন প্রকার খাবার গ্রহণের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে। যা জ্বরের মাধ্যমে আমাদের শরীরে টাইফয়েড এর উপসর্গ হিসেবে সৃষ্টি করে। টাইফয়েড ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে আমাদের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।

আর এই ব্যাকটেরিয়া গুলোর নাম হল সালমোনিলা টাইফি যার কারণে টাইফয়েড জ্বর হতে পারে। এই ব্যাকটেরিয়া গুলো আমাদের মল এবং মৌখিক পথের মাধ্যমে ছড়িয়ে যায়। একজন সংক্রামিত ব্যক্তি মল এবং প্রস্রাব এর মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়া বাহির হয়ে যায়। আর এই কারণেই সংক্রামিত পদার্থের সঙ্গে যদি দূষিত ফল, শাকসবজি কিংবা পানি খাওয়া হয় তাহলে এর সংক্রমণ ছড়িয়ে যেতে পারে।

আর এই টাইফয়েড অতিরিক্ত ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় সংক্রমিত হওয়ার প্রবণতা অনেক বেশি থাকে। যেহেতু বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ আর এখানে বাসস্থান গুলো অধিক ঘনবসতিপূর্ণ তাই টাইফয়েড এখানে সংক্রমিত হতে পারে অধিকারে। যে কোন বয়সের ব্যক্তির টাইফয়েড হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে যে সকল ব্যক্তির শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি পরিমাণে বিদ্যমান থাকে তাদের টাইফয়েড হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে কম থাকে।

টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার – শিশুর টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ

টাইফয়েড রোগের অন্যতম উপসর্গ হচ্ছে জ্বর আসা। টাইফয়েড রোগের লক্ষণ গুলো শুরু হয়ে থাকে শরীরে যখন রোগ জীবাণু প্রবেশ করে তার 10 থেকে 15 দিন পর সাধারণত এ রোগের লক্ষণগুলো ধীরে ধীরে প্রকাশ পেতে শুরু করে থাকে। শরীরের রোগ জীবাণু প্রবেশ করার পরে প্রথম কয়েকদিন চার পাঁচ দিন জ্বর বৃদ্ধি পাওয়া শুরু করে। এক্ষেত্রে জোড় বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি কখনো কখনো জ্বর কমতে শুরু করে এবং আবার বৃদ্ধি পায় কিন্তু সম্পূর্ণ রূপে ভালো হয় না।

জ্বর কম বেশি হওয়ার পাশাপাশি শরীরে আরো নানারকম সমস্যা ধীরে ধীরে প্রকাশ পাওয়া শুরু করেছে এমন অধিকার এ মাথাব্যথা করা এবং তার সাথে সাথে শরীরের ব্যথা অনুভূত হয়ে থাকে, শারীরিকভাবে দুর্বলতাও দেখার দিয়ে থাকে। কারো কারো আবার টাইফয়েড জ্বরের কারণে কষ্টকাঠিন্য দেখা দেয়। শিশুদের ক্ষেত্রে টাইফয়েড রোগ দেখা দেওয়ার কারণে তাদের ডায়রিয়া এবং বমি বমি ভাব বা বমি হয়ে থাকে। 

টাইফয়েড আক্রান্ত রোগীর শরীরে তাপমাত্রা ১০৩ অথবা ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট কখনো বা এর থেকে বেশি ও হতে পারে তার সাথে অন্য সকল উপসর্গ দেখা দিয়ে থাকে। যেমন প্রচন্ড মাথা ব্যথা, মুখের ভেতর ঘা, ক্ষুধা কম পাওয়া খাবারের অরুচি এর পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেওয়া, গা ম্যাজমাছ করার সহজ কফ সহকারে কাশি হওয়া, গলা ব্যথা।

প্রচন্ড পেটে ব্যথা শুরু হওয়া, ওষুধ চলা কালীন সময়েও সপ্তাহকালীন ধরে জ্বর থাকা, কাশি বৃদ্ধি হওয়া, শরীর দুর্বলতা ছাড়াও শরীরের চামড়া লালচে দানার মত দেখা দেওয়া। এছাড়াও টাইফয়েড আক্রান্ত রোগীদের পিঠে কিংবা পেটের অংশে গোলাপি রঙের মতো দানা দানা চিহ্ন দেখা দিতে পারে।

টাইফয়েড হলে কি কি সমস্যা হয়? টাইফয়েড পরবর্তী সমস্যা

টাইফয়েড হলে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভাবে তা নিরাময় করতে হবে। টাইফয়েড এর ফলে আমাদের শরীরে নানারকম সমস্যার সৃষ্টি করে থাকে। আর এই সমস্যাগুলোর সঠিক চিকিৎসা না করা হলে এর ভয়াবহতা দেখা দিয়ে থাকে অনেক ক্ষেত্রে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। টাইফয়েড রোগীদের ক্ষেত্রে সাধারণত নানারকম সমস্যা গুলো ধরতে পারে তার মধ্যে কিছু অন্যতম সমস্যা গুলো তুলে ধরা হলো।

টাইফয়েড রোগে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে ক্ষুদ্রান্ত্রে রক্ষক্ষরন বা ক্ষুদ্রান্ত্রে ফুটো সৃষ্টি করতে পারে । এছাড়াও আমাদের শরীরের অস্থি কিংবা অস্থি সন্ধিতে ইনফেকশন এর দেখা দিতে পারে। মেনিনযাইটিস হতে যারে তাছাড়াও শরীরের পিত্তথলির প্রবাহ হতে পারে, পরিপাকতন্ত্র হতে রক্তক্ষরণ হতে পারে, মেরুদন্ডে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেতে পারে, মস্তিষ্কে প্রবাহ, নিউমোনিয়া, স্নায়ুবিক সমস্যা, শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফোরা দেখা দেওয়া ছাড়াও কিডনিতে বড় ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

টাইফয়েড জ্বর হলে কি কি খাওয়া উচিত

টাইফয়েড জ্বর হলে নানা রকম পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করা খুবই জরুরি যদিও খাদ্য এই রোগ সম্পূর্ণ ভাবে নিরাময় করতে সক্ষম হয় না তবুও এটির মাধ্যমে টাইফয়েডের কিছু উপসর্গ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। টাইফয়েড জ্বর হলে দ্বিগুণ সম্পন্ন এবং সহজ পাচ্ছো খাদ্য গ্রহণ করা খুবই প্রয়োজন। এই খাবারগুলোর মাধ্যমে দীর্ঘ সময়ের জন্য শরীরকে শক্তি যোগান দেবে এবং গ্যাস্ট্রোইনটেষ্টাইলাল এর মত সমস্যা গুলো থেকে দূরে থাকতে সহায়তা করবে। 

টাইফয়েড জ্বর আপনাকে ভালো করার জন্য অবশ্যই একটি খাবার তালিকা অনুযায়ী খেতে হবে। এই খাবার তালিকায় আপনাকে ফাইবার কম খাবার গুলোকে বেছে নিতে হবে যার মধ্যে রয়েছে পাকা ফলমূল, রান্না করা শাক-সবজি সহ পরিষদিত শস্য এবং প্রচুর পরিমাণে শরীরে পানি যোগান দেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু টাইফয়েড আক্রান্ত রোগীর শরীরের তাপমাত্রা বেশি থাকে এজন্য এই সময়ে রোগীর শরীরে ক্যালরির চাহিদাও বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। 

আরো পড়ুনঃ ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার জেনে নিন

আর এ সময় ক্যালরির চাহিদা পূরণের জন্য দ্রুত শক্তি যোগান দিতে সক্ষম এমন সকল খাবার খেতে হবে। যেগুলোর মধ্যে রয়েছে ডাবের পানি, ফলের জুস, গ্লুকোজের পানি এই ধরনের খাদ্য বেশি পরিমাণে খেতে হবে। এর পাশাপাশি আপনি লেবু, তুলসী অথবা আদা চা খেতে পারেন। এই ধরনের স্বাস্থ্যকর পানীয় আমাদের দেহে খুব দ্রুত শক্তি যোগান দিতে সক্ষম হয়। 

তার পাশাপাশি আমাদের শরীরে পানি শূন্যতাকে কমিয়ে আনতে সহায়তা করে। টাইফয়েড রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির খাবার তালিকায় ভিটামিন সি যুক্ত খাবার থাকা খুবই জরুরী। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল এবং ফলের রস প্রতিনিয়ত গ্রহণ করা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী হতে পারে। এক্ষেত্রে আপনি কমলা, আনারস কিংবা মালটা এর জুস করে খেতে পারেন।

টাইফয়েড জ্বর ভালো করার উপায় – টাইফয়েড রোগের প্রতিকার

টাইফয়েড জ্বর যেহেতু একটি পানিবাহিত রোগ তাই আপনাকে অবশ্যই বিশুদ্ধ করে পানি বেশি পরিমাণে পান করতে হবে। অবশ্য এক্ষেত্রে শুধু পানি পান করা তাই নয় এর পাশাপাশি যে কোন তরল খাবার খেতে পারেন। তরুণ খাবার গুলোর মধ্যে রয়েছে ফলের জুস, ডাবের পানি, বিভিন্ন প্রকার হারবাল চা এই তরল খাবারগুলো খাওয়ার মাধ্যমে টাইফয়েড রোগীদের জন্য কার্যকরী হতে পারে।

যেহেতু টাইফয়েড থেকে ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে তাই ডায়রিয়া হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বেশি পরিমাণে তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে। তরল জাতীয় খাবার বেশি খেলে আমাদের শরীর থেকে টক্সিন বেড় হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাবে। আর এই কারনে আমাদের শরীর সুস্থ হবে খুবই তারাতারি। এছাড়াও আপনি টাইফয়েড প্রতিকারের জন্য আদা খেতে পারেন।

আদা আমাদের শরীরের নানা রকম সমস্যা মোকাবেলায় খুবই কার্যকরী। আঘাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আর এই এন্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের রক্তকে বিশুদ্ধ করতে সাহায্য করে থাকে। আমাদের কিডনি থেকে ক্ষতিকর পদার্থগুলোকে বের করতে সহায়তা করে থাকে। আদার গুনাগুন সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় কাঁচা অবস্থায় কিংবা অর্ধেক রান্না করা অবস্থায় যা সবচেয়ে বেশি উপকারী। এজন্য টাইফয়েড রোগের সময় আদা খাওয়া ভালো।

টাইফয়েড জ্বর বেশি পরিমাণে আসলে আপনি অ্যাপেল সিডর ভিনেগার প্রয়োগ করতে পারেন। অ্যাপেল সিডর ভিনেগার এ বিদ্যমান রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যাসিটিক উপাদান। আর এই এসিটিক উপাদান গুলো জ্বর কমাতে সাহায্য করে থাকে। এজন্য শরীরের যখন বেশি জ্বর হয় তখন অ্যাপেল সিডার ভিনেগার দেওয়া যেতে পারে আর এর মাধ্যমে ডায়রিয়া কেউ আটকাতে সহায়তা করে থাকে। টাইফয়েড রোগের জন্য তুলসী পাতা এক ধরনের ঘরোয়া ঔষধ হিসেবে কাজ করে।

সে পাতায় বিদ্যমান রয়েছে অনেক রোগের প্রতিকার ক্ষমতা। তুলসী পাতা আপনি পানির সাথে গরম করে হালকা ফুটিয়ে নিতে হবে তারপর এতে স্বল্প পরিমাণে মধু বা আদার রস কিংবা গোলমরিচের গুড়ো দিয়ে তুলসী পাতা খেতে পারেন। টাইফয়েডের বিদ্যমান ব্যাকটেরিয়া গুলো দূর হয়ে যাবে। এছাড়াও টাইফয়েড জ্বর যদি বৃদ্ধি পায় তাহলে আপনি ঠান্ডা পানির মাধ্যমে জলপট্টি দিতে পারেন। এতে করে আপনার দেহে তাপমাত্রা কমিয়ে আনতে কিছুটা হলেও সাহায্য করে।

টাইফয়েড জ্বর কি ছোঁয়াচে – টাইফয়েড জ্বর হলে কি গোসল করা যায়

যদি বলা হয় টাইফয়েড জ্বর ছোঁয়াচে কিনা, সেক্ষেত্রে হ্যাঁ টাইফয়েড জ্বর একধরণের ছোঁয়াচে রোগ। টাইফয়েড এক ধরনের পানি বাহিত রোগ যা সালমোনেলা টাইফিং নামের এক প্রকার ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকে। আর এই ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সেতু খাবার কিংবা পানি খাওয়ার মাধ্যমে সংক্রমিত হয়ে থাকে। টাইফয়েড রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মাধ্যমেও এই সকল ব্যাকটেরিয়া বা জীবাণু পরিবেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

এছাড়াও এই জীবাণু ও স্বাস্থ্যকর কিংবা অপরিষ্কার হবার অথবা হাতের মাধ্যমেও এটি ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। যখন একজন সুস্থ সবল ব্যক্তি টাইফয়েড রোগে আক্রান্ত সংস্পর্শে আসে তখন এই ব্যাকটেরিয়া টি সুস্থ ব্যক্তির কাছে ছড়িয়ে পড়ে। আর এভাবে টাইফয়েড রোগটি সংক্রমিত হতে থাকে। তাই টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে কম আসার চেষ্টা করাই ভালো। যদিও কখনো সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসেন তাহলে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি অনুশীলন করতে হবে।

আমাদের সমাজে অনেকেই মনে করে যে টাইফয়েড জ্বর হলে গোসল করানো যাবে না কিন্তু এটা সম্পূর্ণরূপে ভুল কারণ টাইফয়েড জ্বর হলে গোসল করানো যেতে পারে। টাইফয়েড জ্বরের চিকিৎসায় অথবা জ্বরের তাপমাত্রা কে নিয়ন্ত্রণে রাখতে গোসল করার গুরুত্ব অনেক। টাইফয়েড জ্বরের রোগীদের গোসল করানোর ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিকভাবে বলতে গেলে একেবারেই এটা নিষেধ করা হয়নি। তাই আপনি জ্বরকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং শরীর ঠান্ডা রাখতে গোসল করতে পারেন।

টাইফয়েড জ্বরের ঔষধ – টাইফয়েড জ্বরের এন্টিবায়োটিক

তুমি বলে রাখা ভালো যে কোন রোগেরই জন্যই নিজে থেকে কোন প্রকার মেডিসিন কিংবা ওষুধ সেবন করা একেবারেই ঠিক কাজ নয়। শুধুমাত্র রেজিস্টারড চিকিৎসক এবং অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী মেডিসিন বা ওষুধ সেবন করতে হবে। আপনি ইচ্ছা করলে রোগ প্রতিরোধের জন্য প্রাথমিক কিছু ঘরোয়া উপায় ও করতে পারেন কিন্তু কোন প্রকার চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ঔষধ বা মেডিসিন সেবন করা থেকে বিরত থাকতে হবে। 

টাইফয়েড জ্বরের কিছু অভিজ্ঞ চিকিৎসকের মতে ঔষধ হিসেবে ফাস্ট জেনারেশন স্ফিলস্পেরিন বেশি কার্যকর হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু এই ধরনের মেডিসিন গুলো ক্ষমতা বেশি হওয়ার কারণে অনেক চিকিৎসকেরাই সেফটক্সিন ইনজেকশন দিয়ে থাকে। এই ইনজেকশনের পরিমাণটি নির্ভর করে থাকে রোগীর অবস্থার উপরে। নিয়মিতভাবে সঠিক পদ্ধতিতে এই ইনজেকশনটির রোগী গ্রহণ করলে দিনের মধ্যেই সুস্থতা লাভ করতে পারেন।

আমরা অনেকেই জ্বর হলে অ্যান্টিবায়োটিক মেডিসিন গ্রহণ করে থাকে। এই অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ গুলো অনেক ক্ষেত্রে কার্যকরী হয়ে থাকে কিন্তু সে ক্ষেত্রে আবার ক্ষতিকর হতে পারে। কারণ এটির মাধ্যমে আমাদের শরীরে ধীরে ধীরে অ্যান্টিবায়োটিক মেডিসিনের কার্যক্ষমতাকে কমিয়ে দিতে থাকে।

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মতে শুরুতে প্যারাসিটামল ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা শুরু করা উচিত। তবুও অবশ্যই আপনাকে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে শারীরিক অবস্থার পরীক্ষার ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে কিছু নির্ধারণ করবেন যে আপনার শরীরের জন্য কোন মেডিসিন টি বেশি কার্যকর হবে সেই ঔষধ দিয়ে আপনি সেবন করুন।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক আপনি নিশ্চয়ই এতক্ষণে জানতে পেরেছেন টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার গুলো কি, টাইফয়েড জ্বর ভালো করার ঘরোয়া উপায় সমূহ গুলো কি কি,  টাইফয়েড জ্বর হলে কি কি খাওয়া উচিত করবেন ইত্যাদি সম্পর্কে। আপনার কাছে যদি আমাদের এই আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার পরিচিতদের সাথে শেয়ার করবেন এবং এই ধরনের আরো গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন ধন্যবাদ। আসসালামুয়ালাইকুম……………………

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *