আসসালামু আলাইকুম আশা করি সবাই ভালো আছেন। আজকে আমরা আপনাদের মাঝে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি। আজকের আলোচ্য বিষয়বস্তু হলো বাতের ব্যথার লক্ষণ ও বাতের ব্যথা থেকে মুক্তির উপায় বাত ব্যথা । আর এই বাত ব্যথা থেকে কিভাবে মুক্তি পাওয়া যাবে সেই নিয়েই আজকের এই আর্টিকেলটি।

বাতের ব্যথার লক্ষণ – বাতের ব্যথা থেকে মুক্তির উপায়

বর্তমানে আমাদের শরীরের একটি যন্ত্রণাদায়ক রোগ। আমাদের শরীরে বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন রকমের বাতের ব্যথা হয়ে থাকে। আপনি যদি এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে অবশ্যই আপনি বাতের ব্যথার লক্ষণ, বাত ব্যথা থেকে কিভাবে মুক্তি পাওয়া যাবে তার সাথে আরও জানতে নানা তথ্য জানতে পারবেন ।

ভূমিকা

আমাদের মাঝে অনেকেরই এই বাতের ব্যথা রয়েছে। এই বাতের ব্যথা রোগটি খুবই সাধারণ তাও এই রোগটি সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান নেই বলে আমাদের মধ্যে দুশ্চিন্তা কাজ করে। এই বাতকে এক ধরনের অটোইমিউন ব্যাধি বলা হয়ে থাকে। বাত এমন একটি রোগ যা রোগ প্রতিরোধ সিস্টেম বা ইমিউন আমাদের শরীরের জয়েন্টগুলোর উপর আক্রমণ করে। 

আপনি যদি এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে অবশ্যই আপনি বাত ব্যথা থেকে কিভাবে মুক্তি পাওয়া যাবে তার সাথে আরও জানতে পারবে কি জন্য বাত ব্যথা হয়ে থাকে এবং বাত ব্যাথার লক্ষণ সমূহ গুলো কি কি? সাথে বাতের আরও বিভিন্ন ধরনের কারণ সম্পর্কে জানতে পারবেন তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক বিস্তারিত। তাই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য অনুরোধ করছি।

বাত ব্যথা কেন হয়?

আমাদের নানা কারণে বাত ব্যথা হয়ে থাকে। এই বাত ব্যথা তখনই হয় যখন শরীরের এক বা একাধিক জয়েন গুলোতে কোমলতা এবং ফোলা ভাব দেখা দেয়। বয়স বাড়ার সাথে সাথে এই বাত ব্যথা হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। এছাড়াও জয়েন্টে ইনজুরি অথবা আঘাতের মাধ্যমেও এই বাত ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

বাত ব্যথার আরো কারণ রয়েছে তার মধ্যে যদি আমাদের ওজন অত্যধিক বেড়ে যাওয়া, শরীরের ওজন বেড়ে যাওয়ার কারণে বিভিন্ন জয়েন্ট গুলোর উপর চাপ বেশি প্রভাব ফেলে যার ফলে বাত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এই বাত ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক অথবা ভাইরাস দ্বারা জয়েন্টগুলো থেকে সংক্রমিত হতে পারে এবং প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে।

আরো পড়ুন: ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার জেনে নিন

এই বাত ব্যথা খাবারের মাধ্যমেও হতে পারে যেমন অতিরিক্ত মদ্যপান করলে। এছাড়াও আমিষ জাতীয় খাবার বেশি পরিমাণে খেলে। তৈলাক্ত মাছ, মাছের ডিম, কলিজা সহ প্রভৃতি খাবার এ যেহেতু পিউরিন বেশি থাকে, সেখান থেকে ইউরিক এসিড তৈরি উৎপাদন হয়।

এই বিশেষ খাবার থেকে শরীরে রক্তের মধ্যে ইউরিক এসিড গুলো বৃদ্ধি পেয়ে টিস্যুর মধ্যে জমা হতে শুরু করে এর ফলে বাতব্যথা সহ ফুলে ওঠে। এ রোগে দেহের ছোট ছোট আকারের জোড়া আঙ্গুল, পায়ের বুড়ো আঙ্গুলের কিরা বা গোড়ালি সহ প্রভৃতি স্থানে আক্রান্ত হয়ে থাকে।

এই বাত ব্যথা আবার কিছু জেনেটিক কারণেও হতে পারে যেমন যদি কারো পরিবারের সদস্য যেমন মা বাবা অথবা রক্তের সম্পর্কীয় আত্মীয়দের মাঝে যদি এই রোগের প্রবণতার থেকে থাকে তবে তার পরবর্তী প্রজন্ম এই রোগটিতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এছাড়াও কিছু পরিবেশগত কারণেও এই রোগটি হতে পারে।

বাতের ব্যথার লক্ষণ

যদি আমাদের শরীরে বাত ব্যথা হয়ে থাকে তবে তার কিছু লক্ষণ আমরা দেখতে বা বুঝতে পারি। বাত ব্যথার প্রধান লক্ষণই হলো ব্যথা করা। এছাড়াও শরীরের বিভিন্ন স্থানে লালচে ভাব দেখা দেওয়া। শরীরে বিভিন্ন স্থান ফুলে যাওয়া। মাংসপেশিগুলো শক্ত হয়ে যাওয়া। জয়েন্ট এর চারপাশে অস্বাভাবিক অবস্থা হয়ে যাওয়া অথবা ফুলে যাওয়া।

এছাড়াও দাঁত ব্যথা লক্ষণ গুলোর মধ্যে শরীরে চলাফেরায় বা কাজকর্মে যে নির্দিষ্ট গতি থাকে তা হ্রাস পাওয়া । যেহেতু বাত এর প্রাথমিক লক্ষণ হল ব্যথা এজন্য এই ব্যথাতেই আমাদের শরীরে বেশি প্রভাব থাকে। আর এই ব্যথার ফলে শরীরে হালকা হালকা জ্বর হতে পারে।

বাত ব্যথার লক্ষণ গুলোর মধ্যে পায়ের গোড়ালি এবং জোরায় অত্যধিক ব্যথা অনুভব করা এবং ব্যথা কমে যাওয়ার পরেও বাপের ব্যথায় আক্রান্ত স্থানগুলো ফুলে যাওয়া। শরীরে বিভিন্ন স্থান যেমন হাতের কব্জি, নখ এবং জয়েন্ট সমূহ গুলোতে প্রচুর পরিমাণে ব্যথা অনুভূত হওয়া।

আপনার যদি এ লক্ষণগুলো প্রকাশ পায় তাহলে দ্রুত অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে এবং সেই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। তার পাশাপাশি যতটা সম্ভব বিশ্রাম নিতে হবে।

বাতের ব্যথা থেকে মুক্তির উপায়

বাত ব্যাথা থেকে মুক্তি পেতে হলে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। আর এই নিয়ম শৃঙ্খলা মাধ্যমে বাদকে দমিয়ে অথবা নিজ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হতে পারে। বাত ব্যথার জন্য অনেক উন্নত ঔষধ আবিষ্কার করা হয়েছে ইতিপূর্বে। বাত ব্যথা কে বলা হয়ে থাকে রিউমাটোলজিস্ট । বর্তমানে এই রোগ নিয়ে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য নানা রকম চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞ রয়েছে।

এই রোগের চিকিৎসার মূল লক্ষ হল অস্থি গুলোতে ইউরিক অ্যাসিডের হার কমিয়ে আনতে হবে এবং এর মাধ্যমে রোগের লক্ষণ ও তার পরবর্তীতে হওয়া অবনতি গুলো ঠেকানো যেতে পারে। চিকিৎসা না করা হলে দাঁতের অস্থির সন্ধির যথেষ্ট পরিমাণের ক্ষতি সাধন করতে পারে এমনকি চলাচল করার জন্য চলন ক্ষমতাও রাস হতে পারে।

বাতের ব্যথা থেকে মুক্তির ঘরোয়া উপায় গুলোর মধ্যে একটি হলো পর্যাপ্ত পানি পান করা। পর্যাপ্ত পানি পান করা বাতিল সমস্যার সমাধানের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়। প্রতিদিন কমপক্ষে চার ক্লাস পানি পান করা উচিত। যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। বাতের ব্যথা কমাতে শরীরচর্চা বা ব্যায়াম করা খুবই কার্যকরী একটি পদ্ধতি। নিয়মিত ব্যায়ামের অভ্যাস থাকলে শরীরের মাংস পেশি ভালো থাকে।

বাতের ব্যথা কমাতে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ খুবই ভালো। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেলে ডাইজেস্টিভ সিস্টেম সুস্থ থাকে। এছাড়া সুষম জাতীয় খাবার বেশি পরিমাণে খেতে হবে। এই সুষম খাবার এর মাধ্যমে আমাদের শরীরের ওজন ঠিক রাখতে হবে। সুবিধামতো সময়ে ব্যায়াম করতে হবে। তবে এক্ষেত্রে ব্যায়ামগুলো অবশ্যই বিজ্ঞানসম্মত এবং শরীরের জন্য উপকারী হতে হবে।

আরো পড়ুন: অন্ডকোষ ব্যাথার কারন কি জেনে নিন

বাতের ব্যথা কমিয়ে আনার জন্য অতিরিক্ত চিনি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ অতিরিক্ত চিনি বাতের ব্যথা বৃদ্ধি করতে পারে। বিশেষ করে ঠান্ডা পানি ও কিংবা আইসক্রিমে যে পরিমাণের অতিরিক্ত মিষ্টি বিদ্যমান থাকে তা বাতের সমস্যা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে থাকে।

কি খেলে বাতের ব্যথা কমে?

বাতের ব্যথা দূর করতে নানা রকম ব্যায়াম ও ওষুধ খাওয়ার পাশাপাশি ব্যথা নিরাময়ী উপযোগী সুষম খাবার গ্রহণ করাও খুবই জরুরী। বাতের ব্যথা কি জাতীয় খাবার খেলে উপকারী হবে তা আমরা নিচের আলোচনা মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা করব। আর এই খাবারগুলো খেলে বাতের ব্যথা থেকে কিছুটা হলেও আরাম পাওয়া যাবে।

বাতের ব্যথা কমাতে হলে বিভিন্ন মসলা যেমন আদা, রসুন, দারুচিনি যেগুলোতে প্রদাহ নাশকগণ রয়েছে তাই এগুলো নিয়মিত গ্রহণ করতে হবে। ব্রোকলি একধরণের প্রবাহ নাশক গুণ সমৃদ্ধ। এতে সালফোরাফেনের মতো রয়েছে একাধিক প্রদাহ নাশক উপাদান। যার মাধ্যমে বাতের ব্যথা কমতে পারে।

বাতের ব্যথা কমানোর জন্য পালং শাক খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি খাদ্য। পালংশাকে প্রচুর পরিমাণে এন্টি অক্সিডেন্ট থাকে। তাই পালং শাক বেশি পরিমাণে খেলে ভাতের ব্যথা খুব সহজে নিরাময় করা সম্ভব। বিশেষত ক্যাম্পের অল নামক এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বাতের ব্যাথা কমাতে সাহায্য করে।

বাতের রোগীদের জন্য খুবই উপকারী হল দুধ বা দুগ্ধ জাত খাদ্য। দুধ ও দুগ্ধ জাত খাদ্য খেলে আমাদের শরীরের ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করবে। এছাড়াও যে কোন সবজি বা ফল যেগুলো ভিটামিন সি রয়েছে সেগুলো খাবার পরিমাণ মতো খেতে হবে।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক আশা করি আপনি এতক্ষণে জেনে গেছেন দাঁত ব্যথা কি কারনে হয়ে থাকে? এবং এর হাত থেকে মুক্তির উপায় সমূহ গুলো কি কি। আপনার কাছে যদি এই পোস্টটি ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন। তার সাথে নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের ব্লগ পোস্ট বা আর্টিকেল পেতে আমাদের সাথে থাকুন। ধন্যবাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *